সে সকাল থেকেই মন ভালো নেই, মন ভালো নেই বলে বেড়াচ্ছি। ওয়েট… ঠিক সকাল নয়, কাল রাত থেকেই। আমার হঠাত হঠাত এমন হয়। মন খারাপ হলে একেকটা সময় একেকরকম করি। চট্টগ্রামে থাকতে আমি সবচেয়ে কমনলি যেটা করতাম সেটা হলো চুল কাটতে যেতাম। তালিকায় তারপর আছে ডিসি হিলের উপর দিয়ে চেরাগি মোড় হয়ে বাতিঘরে যাওয়া। তাছাড়াও আরেকটা জিনিস আমি করতাম – অচেনা পথ ধরে যেতে থাকতাম। একটা প্যাটার্ন তখন ডিজাইন হয়ে গিয়েছিলো।
অচেনা পথ ধরে হাটা, অচেনা জায়গায় যাওয়া, অনেক উপর থেকে নীচের কিছুকে দেখা, মাক্রোস্কোপের ভেতরে তাকানো – এসব জিনিসগুলো সবাইকে সবসময় টানে। সবটুকু মনোযোগ দিয়ে আমি কাজগুলো আমি করি। তাই মন খারাপ থাকলেও সেদিকে আর মনোযোগ থাকেনা।
যাহোক, খুলনায় এসে এই প্রথম সেরকম মনে হচ্ছে। আগেই মন খারাপ হলে কিসব করি তা বলেছি। এবার একটু ভিন্নভাবে এবং গভীর থেকে বিষয়টাকে বোঝার চেষ্টা করেছি। (এক) এতোদিন কিছু কাজ যেভাবে চেয়েছিলাম ঠিক সেভাবে হচ্ছিলো না। এখন সব কাজ একসাথে কাজ করা শুরু করেছে তাই প্রেসারে পড়ে গেছি। তাই মনে খারাপ হয়ে গেলো। (দুই) কয়েকদিন ধরে ঘুম ভালো হচ্ছেনা। (তিন) টার্ম ফাইনালের কথা নাহয় বাদই দিলাম।
প্রথমে অল্প মন খারাপ হয়। তারপর মন খারাপ কেন হলো সে কথা ভেবে আরও মন খারাপ হয়। এবং সর্বশেষ, এতো মন খারাপ কেন হলো সেটার চিন্তায় মন একদমই খারাপ হয়ে যায়। এই হলো অবস্থা।
দৃষ্টিভঙ্গি সবসময়ই একটা পাওয়ারফুল ব্যাপার। আমি খুব সূক্ষভাবে বিশ্লেশন করে দেখলাম আমাদের চারপাশে এমন অনেক ছোট ছোট কারন আছে যার সংখ্যা আমাদের মন খারাপ হওয়ার কারনের চেয়ে বেশী।
আমি দেখলাম এই মুহূর্তেই আমি বেশ কিছু সেলিব্রেট করার মতো ছোট ছোট কারন বলে দিতে পারি। আমি মসজিতে বসে বসে যখন চিন্তা করছিলাম, তখন আমার পাশেই বন্ধু নাফিস বসে ছিলো। নাফিসকে বললাম আজ আমার মন খারাপ, বিকালে ফুটবল খেলবো। সে সাথে সাথেই রাজি হয়ে গেলো। সে যদি কোন কারনে না করতো? সে নিশ্চয়ই আমার মন ভালো করতে চায়। আবার, সব কাজ একসাথে হচ্ছে, সেটাকে প্রেসার হিসেবে নিচ্ছি কেন? একটু প্রেসার হলেও সেটা তো আমার ভালোর জন্যই। তাছাড়াও বুঝতে পারলাম আসলে আমার বাইরে প্রচন্ড গরম পড়ার কারনে একটু মন খারাপ হয়েছে যেটা নিয়ে আর যা-ই হোক, মন খারাপ করা যায় না। কারন সেটা আমার নিয়ন্ত্রনে নেই।
তাই আমি মনে করি মন খারাপ না করে বরং এভাবে বিষয়গুলোকে চিন্তা করা যাতে পারেঃ
- মন খারাপের কারনগুলোর মূলে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
- আশেপাশে ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখলে সেলিব্রেট করার দুয়েকটা কারন পেয়ে যাবেন। বাদ যাবে কোন সেলিব্রেশন – এমনভাবে চলতে পারেন।
- করতে ভালো লাগে কিংবা মনোযোগ সরিয়ে রাখে সেরকম কোন কাজ করতে পারেন।
এতোটুকুই। ভালো থাকবেন। ভালো রাখবেন।