নানাবাড়ি, আমার হল (ডর্ম) জীবন আর আমি

অনেদিন লেখা হয় না। আজ শুক্রবার। ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়েছে। ঠিক দেরি হয়েছে বললে ভুল হবে। বরং বলি দেরি করেছি। কাল রাতে হঠাত কালবৈশাখী ঝড় হলো। এই এক ঝড়ে কতো কি হয়ে গেলো। অনেক অনেক দিন পর ভার্সিটির হলে বিদ্যুৎ চলে গেলো। পুরো হলের সব ছেলে পেলে তাই উদযাপন করতে রুম থেকে বেরিয়ে পড়ল। সবাই কমন করিডোরে এসে সজোরে চিল্লাতে লাগলো – শাহিইইইন… ধরে ফেল, ধরে ফেল। আধোঘুমে ছিলাম আমি। তাদের চিল্লাচিল্লিতে আমার ঘুম গেলো উবে। বুঝার চেষ্টা করলাম তারা কি চায়। বুঝতে পারিনি। পরে সকালে নাশতা খেতে যাওয়ার পথে এক বন্ধুর সাথে গল্প করছিলাম। সে জানালো এই ঘটনা নাকি নিয়মিত হয়। যখনই বিদ্যুৎ যায়, ছেলেপেলেরা কিছু একটা নিয়ে চিল্লাতে চিল্লাতে আকাশ আর ছাঁদ এক করে ফেলে। ওহ, বলা হয়নি, আমি হলে নতুন উঠেছি। তাই রীতিনীতি জানিনা ওতোটা। অনেকদিন হলরোডের একটা বাসায় থাকতাম একা। তাও থাকতাম জোর করে। একা থাকলে চিন্তা ভালো করা যায়। মনোযোগ দিয়ে কাজ করা যায়। কিন্তু শেষদিকে এসে মনে হলো, থাক, আর কয়দিনই বা আছি ভার্সিটিতে। যাই, একটু হলে থেকে আসি। ভিন্নকিছু উপভোগ করি। এভাবেই আমার হলে উঠা।

সকালে নাশতা যাওয়ার পথে নীচ তলায় এক বন্ধুর রুমে ঢু মারতে গেলাম। উদ্দেশ্য তাকে সাথে নিয়ে যাবো নাশতা করতে। তার রুমের পেছনের বারান্দায় গিয়ে দেখি এক পিচ্চি গাছ থেকে বরই পাড়ার চেষ্টা করছে। বেচারা নাগাল পাচ্ছে না। বারান্দাটা একটু উঁচু। আমি একটা ডাল টেনে তার হাতে ধরিয়ে দিতে যাবো, তখনই সে নিজেই আরেকটা ডাল ধরে দিলো টান। কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখি হাতে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করলাম। একটা কাঁটা ঢুকে গেছে হাতে। বেচারা ছোটো মানুষ বুঝতে পারেনি এমন হবে। আমি চলে এলাম।

হলের রাস্তাটার সামনে একটা আম গাছ আছে। বেশকিছুদিন ধরে নজর রাখছিলাম। প্রমান সাইজের হলেই হানা দিবো। এ জায়গায় একটা কথা বলে দিই – হলকে কেনো জানি আমার নানার বাড়ির মতোই মনে হয়। আম্মুর জন্ম একটা বাড়িতে ঠিক আছে, কিন্তু আশেপাশের সব বাড়িকেই আমরা নানাবাড়ি ধরে নিই। ধরে নেয়ার কারন প্রত্যেকের আতিথেয়তা। আমরা গেলে তারা এমন ভাবে করে, নিজের আপন নানাবাড়ি না ভেবে উপায় নেই। যাহোক, নানার বাড়ি গেলে দেখা যেতো চারদিকে অনেক গাছে। কোনো না কোনো গাছে কিছু না কিছু একটা ধরেছে। হয় নারকেল, নাহয় পেয়ারা, নাহয় বাতাবী লেবু আর নাহয় বরই। কাজিনরা দলেবলে যেতাম, দেখতাম, পছন্দ হলে খেয়ে ফেলতাম। কোথাও বলার মতো কেউ নেই। সবই আমাদের ইচ্ছা। হলের পরিবেশও একদম তাই। চারদিকে অনেক ফলমূলের গাছ। কোনো গাছে কাঠাল, কোনো গাছে পেয়ারা, কোনো গাছে গাব, ডাব, বা অন্যকিছু। যে যখন যেভাবে চায়, খেতে পারে। কেউ কিছু বলবে না।  

নাশতা করে ফেরার পথে আম গাছে চোখ পড়তেই দেখলাম আমটা প্রমান সাইজের হয়ে গেছে। অন্যকারো নজরে পড়ার আগেই পেড়ে নিয়ে উদরে চালান করে দেয়াটাকে যথার্থ মনে করলাম। যেই ভাবা সেই কাজ। রুমে এসে লবন দিয়ে আমটা খেতে খেতে ভাবছি, একটাই তো জীবন। টুপ করে কোনো একদিন মরে গেলেই তো সব শেষ। কি দরকার এতো চিন্তাভাবনার? কি দরকার এতো প্যাঁচাল করার? আহা, জীবনটা সুন্দর।        

The Importance of Finding True Happiness Beyond Material Possessions

Have you ever chased after something for so long, only to realize it means nothing to you once you finally attain it? Have you been playing at boss casino for 5 years only to realize that it doesn’t bring you any pleasure? I certainly have. Six or seven years ago, I used to watch people on stage with big names, speaking in plenary discussions, and receiving international accolades, and I thought to myself, “that’s the position I want to be in. That’s the position that can make me happy.” Fast forward to today, and I have achieved all of those things. But still, I find myself feeling unfulfilled and running after something else.

The truth is, the focus always shifts. It’s the nature of almost all human beings. We constantly try to find our happiness in materialistic things, believing that achieving more will make us happier. But the reality is, material possessions and accomplishments can only bring temporary happiness. It’s like a drug – once you have it, you feel good for a while, but then you need more to feel the same way again.

So what can we do to find true, long-lasting happiness? My advice is to invest your time in something even more meaningful – building and nurturing relationships, or helping others in need. These are the things that truly give us a taste of real happiness. When you surround yourself with people you love and who love you back, you create a support system that can uplift you in the toughest times. When you help someone in need, you experience the joy of making a positive impact in someone else’s life.

It’s important to remember that wealth can come and go. If you lose your wealth, you can regain it. But if your nearest or dearest one dies, you can’t get them back. So instead of chasing after material possessions and accomplishments, focus on what really matters in life – the people you love and the impact you can make on others. Only then will you find true happiness that lasts a lifetime.

What do you think? Have you found happiness beyond material possessions? Share your thoughts in the comments below.

#love#experience#people#happiness#lifelessons

আমাদের নাইন্টিনাইন ক্লাব

কতো ছোট্ট একটা জীবন। ছোট্ট এই জীবনে আমরা নানানভাবে ব্যস্ত হয়ে যাই। জড়িয়ে পড়ি মোহ-নানান মায়ায়। নানান বেড়া জালে। এই বেড়া জাল কাটিয়ে উঠতে গিয়ে আমাদের সম্মুখীন হতে হয় বিভিন্ন পরিস্থিতির। এসব পাড়ি দিতে দিতে নিজের অস্তিত্বই হারিয়ে ফেলি। ফুড়ুত করে কোন সময় যে জীবনটা ফুরিয়ে যায় সেটা টেরই পাইনা। মৃত্যুর মতো সুনিশ্চিত বিষয়কে আমরা ভুলে যাই। এতো কিছু কেনো করি আমরা? কেনো জড়াই এতো মায়া? মোহে? কেনো এতো ধনসম্পদের পাহাড় গড়ি? জীবনটা একটু সাদামাটা হলেই বা সমস্যা কোথায়? অবশ্য, বোকার মতো আমরা দুনিয়ার এই ইঁদুর দৌড়ে এতোই মজে থাকি, এই প্রশ্ন মাথায় আসার সুযোগই হয়না।

অনেকদিনের ইচ্ছা একটা স্মার্টওয়াচ কিনবো। লেদারের একটা ব্যাগ নিবো। এক আউটলেটে সুন্দর ব্যাগ দেখেছি, ব্যাকপ্যাকটা চেইঞ্জ করবো। যতোবার টাকা হাতে পেয়েছি, এসবের কথায় মাথায় এসেছে। কিন্তু পরমুহুরতে ভেবেছি, না, থাক। টাকাটা বাঁচিয়ে রাখি। পরে বিপদে কাজে লাগবে। অথবা ভালো কোনো জায়গায় বিনিয়োগ করা যাবে। কিন্তু কই, অনেক টাকা এলো গেলো, বিনিয়োগ তো হলো না। না হলো বিন্যোগ, না পূরণ হল ছোট্ট ছোট্ট শখ, কি লাভ এতে? সত্যি বলতে অনেকেই নিজেদের সুখকে গুরুত্ব দিনা। এটা করা মোটেও উচিৎ নয়।

একতকা গল্প বলে শেষ করবো। এক রাজা বের হয়েছেন তাঁর রাজ্য ঘুরতে। আর দেখতে, তাঁর রাজত্বে প্রজারা কেমন জীবন যাপন জকরছেন। যেমন কথা তেমন কাজ, রাজা বের হয়েছেন, ঘুরছেন, ফিরছেন, কুশলাদি বিনিময় করছেন। রাজা দেখলেন, সবারই কোনো না কোন অভিযোগ আছে। আছে অশান্তি। শুধু একজন কৃষক আছেন যিনি আলাদা। যার কোনো দুঃখ নেই। রাজা তো বেশ অবাক। যাহোক, ভ্রমণ শেষে রাজা চলে এলেন। ঐ কৃষকের কথা রাজা ভুলতে পারেননি। তিনি তাঁর সভাসদ, মন্ত্রীবর্গদের ডাকলেন, ঘটনার বিবরন বর্ণনা করে কারন জানতে চাইলেন। একজন মন্ত্রির বললেন, সে কারনতা জানে। কি কারন? কারনটা হলো – তিনি নাইন্টি-নাইন ক্লাবের সদস্য না! এটা আবার কেমন? শ্রীঘ্রই বুঝবেন।

মন্ত্রী মশায় এক অদ্ভুত কাজ করলেন। তিনি ঐ রাতে হাসিখুশি কৃষকের বাড়ির সামনে গিয়ে একটা থলে রেখে আসলেন। থলেতে নিরানব্বইটা স্বর্ণমুদ্রা রাখা। রাত পেরিয়ে সকাল হলো। কৃষক পরদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে দরজার সামনে রাখা থলেটা দেখতে পান। দ্রুত হাতে নিয়ে খুলে দেখেন তাতে নিরানব্বইটা স্বর্ণমুদ্রা রাখা। প্রথম তাঁর মাথায় যে প্রশ্নটা আসলো সেটা হলো – নিরানব্বইটা কেনো? নিশ্চয়ই একশটা ছিলো। বাকি একটা গেলো কই? হাসিখুশি কৃষক পড়ে গেলেন মহা চিন্তায়। হন্নে হয়ে ঐ একটা স্বর্ণমুদ্রার খোঁজ করতে গিয়ে সেদিন আর ক্ষেতে যাওয়া হলো না। এরপর থেকে যেখানেই যান, একটা স্বর্ণমুদ্রা খুজে বেড়ান। স্বর্ণমুদ্রা তার মাথা খেতে শুরু করলো। নিরানব্বইটা স্বর্ণমুদ্রা থাকার পরও সে সন্তুষ্ট নেই। আরও একটা লাগবে যে…। কৃষকমশায় দিন নাই রাত নাই, প্রচন্ড খাস্টাখাটনি শুরু করলেন। যেকোনো মূল্যে আরেকটা স্বর্ণমুদ্রা কেনার টাকা জমাতে হবে। সারাদিন প্রচন্ড খাটাখাটনি করতে করতে মেজার হয়ে যায় খিটখিটে। যেদিন আয় কম হয়, হয় বউকে পেটান, না হয় বাচ্চাকে। তাঁর সংসারে আর সুখ রইলো না।

এই দেখে মন্ত্রীমহোদয় আবার রাজার কাছে এলেন। জানালেন, তাঁর রাজ্যের সর্বশেষ সুখি মানুষটিও অসুখি হয়ে গেছে। রাজা জিজ্ঞেস করলো, কীভাবে? মন্ত্রী জবাব দিলেন, ঐ যে, নাইন্টিনাইন ক্লাবের সদস্য বানিয়ে দিয়েছি! রাজা বললেন, অনেক শুনেছি, এবার বলো নাইন্টিনাইন ক্লাব কি… মন্ত্রী বলনে, দেখুন, আমাদের প্রত্যেকের অন্তত নিরানব্বইটা কারন আছে সুখি থাকার, হাসিখুসি থাকার। কিন্তু আমরা সেগুলোর দিকে কোনো নজর দিইনা। নজর দিই সেই একতা জিনিসের দিকে, যেটা হয়ত আমার-আপনার নাই। যার কারণে আমরা অসুখি হয়ে পড়ি। ভোগবাদী এই সমাজে আরও চাই – আরও চাই করতে করতে সবার সুখ বিসর্জন দিয়ে দিয়েছি। তাঁর উপরে স্থান দিয়েছি ভোফগ বিলাসিতাকে। যার জন্য আমরা আজ কেউই সুখি নই। তাই নিজের সুখ-শান্তিকে যতোটা সম্ভব নাগালের মধ্যে রাখতে হবে, তাকে গুরুত্ব দিতে হবে, তাতে বিনিয়োগ করতে হবে।

সুখি মানুষের জীবনে আপনাক স্বাগতম!

দাগী আসামি থেকে ধর্মপ্রচারক – Malcolm X

মে, ১৯২৫। আমেরিকার ওকলাহোমায় আর্ল লিটল ও লুইজ লিটলের ঘরে জন্ম নেন একটা ছোট্ট ফুটফুটে শিশু। পিতা আর্ল পেশায় একজন আফ্রো-আমেরিকান ব্যাপটিস্ট মিনিস্টার। আর মা লুইজ গ্রানাডীয়-আমেরিকান এক্টিভিস্ট। রাজনৈতিক শত্রুতার কারণে ১৯৩১ সালে গুপ্ত হত্যার স্বীকার হলে মাত্র ৬ বছর বাবাহীন পুত্রকে নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়ে যান মা। ছেলে স্কুলে ভালো ছাত্র হিসেবে পরিচিত হলেও পড়াশোনা বেশিদূর এগোয়নি। নানান কারণে স্কুল থেকে ঝড়ে পড়েন, যুক্ত হন ভয়ংকর মাদক বেচাকেনার সাথে। এসব কারণে ‘ডেট্রয়েট রেড’ তকমাও জুটে যায় অল্পবয়সে। সবকিছুর একটা শেষ আছে, তারও হলো তাই-ই। মাত্র ২১ বছর বয়সে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ঢুকতে হয় জেলখানায়। সেখানেই দেখা হয় ব্ল্যাক মুসলিমদের ডুবতে থাকা দল নেশন অফ ইসলামের ততকালীন প্রধান এলিজা মুহাম্মাদের সাথে। তার হাতে ইসলামের দীক্ষা নিয়ে নাম বদলে ফেলেন। নতুন নাম মালিক এল শাহাবাজ। তার বাগপটুতা আর চৌকশ নেতৃত্বের কারনে প্রায় অস্তমিত হতে যাওয়া ৪০০ জনের দল নেশন অফ ইসলামের সদস্য সং্খ্যা ৮ বছর পেরুতেই ঠেকে ৪০,০০০ এ। চারদিকে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। স্বয়ং মার্টিন লুথার কিং তার কাজের ভুয়সী প্রশংসা আর সাহায্য সহযোগিতা করেন। খ্যাতির বিড়ম্বনাও ছিলো প্রচুর। তার রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে এফবিআইয়ের নজরে আসেন তিনি। পরের জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপ নিতে হয়েছে সাবধানে। এফবিআই নজর রাখছে যে… চরম বন্ধুর এই জীবনের গল্প ম্যালকম এক্সের। ১৯৬০ সালের দিকে জনপ্রিয় বই Roots এর লেখক আলেক্স হ্যালিকে সাথে নিয়ে নিজের জীবনীগ্রন্থ রচনায় হাত দেন মাত্র ৪০ বছর বয়সে আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়া এই নেতা।

১৯৬৫ সালে তার এই বই Malcolm X নামে প্রকাশিত হলে বাজারে সাড়া পড়ে যায়, অর্জন করে বেস্টসেলার খেতাম। বইদুটি নিয়ে করা আলোচনাটি পেলাম রকমারির ইউটিউব চ্যানেলে। ভিডিওর লিংকটা দিয়ে দিলাম। আপনারা দেখতে পারেন।

তিন ভুবনের শিক্ষা ও আমার দু-পয়সা

তিন ভুবনের শিক্ষা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে অনেকেই আমাকে বইটি পড়তে বলেছেন। শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি বিশেষ আগ্রহের কারণে আমিও তড়িঘড়ি করে বইটা সংগ্রহ করি। এই বইয়ে মূলত জাপান, নেদারল্যান্ড এবং বাংলাদেশে বসবাসকারী তিন বাবামা’র তাদের সন্তানকে গড়ে তোলার গল্প ও তুলনামূলক আলোচনা করা হয়েছে। বইয়ে ভিনদেশে থাকা বাবামাদের যে অভিজ্ঞতা, তা পড়লে সহজেই বুঝা যায় কতো আয়োজন শিক্ষার্থীদের মানুষ বানানোর জন্য, সময়ের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য। বুঝতে পারবেন উন্নত দেশগুলোর তুলনায় আমাদের শিক্ষার্থীদের বইয়ের যাতাকলে নিষ্ঠুরভাবে পিষে ফেলার লোহমর্ষক বর্ণনাও।     

অনেকেই মনে করেন আচরণ, নীতি-নৈতিকতা শেখানোর দায়িত্ব পরিবারের। স্কুল আমাদের শুধু পড়াশুনাটাই শেখাবে। স্কুলের পরিধি যে শুধু পড়াশুনা শেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে জাপানী শিক্ষা ব্যবস্থা। শিশুদের পড়াশুনা জীবনের প্রথম দিন থেকে বই আর পরীক্ষার বোঝা না চাপিয়ে বরং তাদের মধ্যে আত্ননির্ভরশীলতা আর পারস্পরিক সহযোগীতার মানসিকতা গড়ে তোলাটাই তাদের প্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য। সাইকেল চালিয়ে দলবেঁধে স্কুলে যাওয়া, স্কুলে নিজের কাজ নিজে করা এবং বিশেষ করে বাড়িতে বাবামার কাজে সাহায্য করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো শ্রেণীকক্ষেই শেখানোর ব্যাপারগুলো সত্যি প্রশংসাযোগ্য।

মূল্যায়ন পদ্ধতি যেকোনো শিক্ষা ব্যবস্থার খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর কথা তাই আলাদা করে বলতেই হয়। এইদিকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ডাচরা। শুধু ক্লাসের পারফর্মেন্স বা পরীক্ষার খাতার ক’টা লাইন দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়না। বরং সামগ্রিক মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটাকে তারা ভাগ করেছে তিনভাগে। কোনো শিক্ষার্থীর সামাজিক, মানসিক এবং একাডেমিক উন্নতিকে এই মুল্যায়ন প্রক্রিয়ায় বিবেচনা করা হয়। তাদের ক্লাসে রোল নম্বর টাইপ কিছু নেই। তারা মনে করে, এর ফলে ছোটছোট শিক্ষার্থীদের মনে ভেদাভেদ, উঁচুনিচুর বীজ বপন হতে পারে। ফলাফল তৈরির পর থাকে বাবামা’র সাথে শিক্ষদের এক-এক (ওয়ান-অন-ওয়ান) আলোচনা, যার উদ্দেশ্য সন্তানের সামগ্রিক উন্নতিকে কিভাবে আরও গতিশীল করা যায় তার কাস্টমাইজড এবং পার্সোনালাইজড সাজেশন দেয়া।

সার্টিফিকেট পরিক্ষাগুলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রান ভোমরা। কতো-শতো প্রস্তুতি আমাদের বাবামাদের, কতো ত্যাগ, মাস-ছয়েক আগে থেকে বাসায় আত্নীয়স্বজনদের আসা নিষেধ – কারন সামনে বোর্ড পরিক্ষা। আর যাই হোক, এ প্লাস মিস করা যাবেনা। ছেলেমেয়ে এ প্লাস না পেলে লজ্জায় মুখ দেখাবে কীভাবে? এদিকে শিক্ষার্থীদের অবস্থাও কাহিল। ভোরে কোচিং দিয়ে শুরু, তারপর স্কুল, সেখান থেকে কোচিং, তারপর বাসায় এসে কাপড়চোপড় খুলতে না খুলতেই টিউটর। টিউটর চলে যাওয়ার পরপরই শুরু হয় বাবামা’র খবরদারী… পড়া, পড়া আর পড়া। সত্য কথা বলতে, পড়াশুনার মধ্যে এতো ডুবিয়ে রাখতে রাখতে তাদের যে একটা জীবন আছে, আমাদের বাবামা’রা সেটাই ভুলে গেছেন। বাস্তবজ্ঞানকে পাশে ঠেলে মাত্রাতিরিক্ত বই মুখিতার ফলে যেমন শেখাটা হচ্ছেনা, অন্যদিকে জীবনের অন্যদিকগুলোও হারিয়ে ফেলছি। ফলাফল শূণ্য। না শিখতে পারছি, না পারছি দক্ষতা অর্জন করতে। তাদের বোর্ড পরীক্ষা আছে, আছে সে পরীক্ষার সংশ্লিষ্ট একটা বোর্ডও, তবে তার উদ্দেশ্য যতোটা না পরীক্ষা নেয়া, তারচেয়ে ঢের বেশী হলো পরীক্ষার ভীতিকর পরিবেশ দূর করা। আর যাই হোক, শিশুদের কোমল মনে পড়াশুনা নিয়ে ভীতি তৈরি হতে দেয়া যাবেনা।

নীম পাতার পুষ্টিগুণ নিয়ে কারও কোন দ্বিধা নেই। তাই বলে তিতা নিমের কাঁচা রস যদি খেতে দেয়া হয় তাহলে কি পেটে চালান করা সম্ভব? মোটেও না। জ্ঞানের ব্যাপারটা তেমনই। রবীন্দ্রনাথের বিশেষ ভাবনা আছে শিক্ষাকে ঘীরে। তিনি বলেছেন, খাওয়া খেতে গেলে সাথে না চাইলেইও কিছু হাওয়া আপনার পেটে চলে যাবে। এই হাওয়া, খাওয়ারই একটা অংশ। আপনি জোর করে পেটে হাওয়া ঢুকা বন্ধ করতে চাইলে খাওয়াটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। আমরা আমাদের সন্তানদের গড়ে তুলছি এমন এক ভয়ংকর পদ্ধতির মধ্য দিয়ে, যেখানে তাদের জোর করে গুনাগুন সমৃদ্ধ তিতা নিমের রস খাইয়ে দেয়া হয়। আর ছেলেমেয়েরা এর তেজ সহ্য করতে না পেরে বমি করে দেয়। বলি কি, ছাত্রছাত্রীদের বর্ষাকাল রচনা মুখস্ত করতে না দিয়ে তাদের নিয়ে কোন এক বর্ষামুখর দিনে বেরিয়ে পড়ুন। অথবা দলবল নিয়ে নৌকা ভ্রমনে যান। দেখবেন, তারা নিজেরাই কতো অসাধারণ বর্ননা দিবে। অবশ্য এতো বর্ষায় ভেজা আর নৌকা ভ্রমণ দিয়ে কি হবে? এসব দিয়ে কি আর এ প্লাস পাওয়া যায়?    

কাজের কথায় আসি – শিক্ষা ব্যবস্থা একটা সামগ্রিক ব্যাপার। শিক্ষার্থী, বাবামা আর শিক্ষকেরা এর প্রধান অংশীদার। সবারই সামগ্রিক প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাবে এই ব্যবস্থা। এই এগিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় সরকারের কাজ হবে ছাত্রছাত্রীদের বিকশিত হওয়ার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে দেয়া। সমাজের কাজ হবে পরিবর্তনকে উৎসাহিত করা। আর বাচ্চাদের কাজ হবে নিয়মনীতি আয়ত্বে আনা, দায়িত্ব পালন করা। তাহলেই বদলে যাবে দেশ ও জাতীর ভবিষ্যৎ।

অন আ ব্রেক

ঘড়িতে যখন সকাল সাড়ে ছয়টা, এলার্মের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো। চোখ মুছতে মুছতে প্রতিদিনকার মতো ফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখে একটু হকচকিয়ে গেলো রিশান। সকাল সকাল তানিশার টেক্সট। তাতে লেখা – “কি খবর? কেমন যাচ্ছে সবকিছু?” শীতের সকাল। অন্যদিন হলে শীতকে জয় করে গায়ে জড়ানো লেপ ছেড়ে হিমশীতল পানিতে মুখহাত ধুতেই পাক্কা একঘন্টা লাগিয়ে দেয়ার কথা। আজকে তার ব্যতিক্রম। দ্রুত বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো রিশান। জানালার গ্রিল ধরে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে সে। নন্দনকাননের যে বাড়িটায় থাকে, সেখান থেকে জানালা দিয়ে ডিসি হিলের খুব সুন্দর একটা অংশ দেখা যায়। কৃষ্ণচূড়ার গাছটা লালে-লাল হয়ে আছে। কোথা থেকে একটা শালিক পাখি এসে বসেছে। এই বাসাটায় রিশান আছে গতো তিন বছর ধরে। প্রতিদিন কাঁক দেখা যায়, চড়ুই দেখা যায়, মাঝে মাঝে ময়নাও দেখা যায়। কিন্তু শালিক কখনো চোখে পড়েনি তার। পাখিটার দিকে গভীর মনোযোগে তাকাতেই একসাথে অনেকগুলো স্মৃতি ধরা দিলো। যেন শালিকটা দুইপাখা বোঝাই করে এনেছে সেগুলো। যেই স্মৃতি রোমন্থনে ডুব দিবে, অমনিতে বিকট শব্দে তার মনোযোগ ভিন্নদিকে চলে গেলো। মোড়ের ট্রান্সফরমারটা ফুটে গেছে। পরক্ষনে অনেকগুলো কাঁককে দেখা গেলো কাঁ-কাঁ করতে ঝাক বেঁধে ওদিকে যেতে। তাদের দলের কোন কাঁক হয়তো মারা গেছে ঐ ট্রান্সফরমারে।

সকাল সাড়ে সাতটার ট্রেন ধরে ভার্সিটিতে যাবে রিশান। এরই মধ্যে বিশ মিনিট চলে গেছে। আপাতত স্মৃতিচারনের সময় নেই। কোনোভাবে ফ্রেশ হয়ে শীতের কাপড়টা গায়ে চাপিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে। একটা রিকশা নিয়ে পৌঁছে যায় ষ্টেশনে। এখন আর আগের মতো ফ্যামিলি বগিতে বসার তাড়া নেই। শাটলে পলিটিক্স বন্ধ করে দেয়ায় রিশানের ভালোই হয়েছে। কোন একটাতে উঠে গেলেই হলো, সোজা ভার্সিটি পৌঁছে যাওয়া যায়। একটু পর শাটল চলতে শুরু করলো। জানালার পাশের একটা সিটে রিশান বসে আছে। ব্যাগ থেকে সমরেশ মজুমদারের ‘মেয়েরা যেমন হয়’ বের করেছে। বই খুলে বসে আছে ঠিকই, কিন্তু পড়ার আগ্রহ নেই। তাঁর মনোযোগের পুরোটা জুড়ে তানিশার ঐ টেক্সটটা। আবার সে ভাবনার রাজ্যে ডুব দিলো…

তানিশার সাথে তাঁর দেখা হয় ভার্সিটি কোচিং এর সময়। প্রথমে ক’দিন চকবাজারে করলেও এতো লোকের আনাগোনা ভালো না লাগায় জিইসিতে চলে আসে রিশান। সেখানেই তাদের দেখা। দুজনই পড়াশুনায় ভালো। কোচিং এর মডেল টেস্টে প্রথম দিকে থাকতো তারা। একজন আরেকজন থেকে নোট ধার নিতো, পড়া বুঝিয়ে নিতো। আবার কোনদিন দুজনে বই নিয়ে গল্প করতে করতে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরতো। কাজের-অকাজের কথা, নিয়মিত দেখা হওয়া, একই ভালো লাগার বিষয় – একটা ফ্রেন্ডশিপকে এগিয়ে নেয়ার উপঢৌকন হিসেবে যা দরকার, তার সব ছিলো তাদের মধ্যে। ঐ উঠতি বয়সে যেমনটা হয়, কোচিং এর এক ছেলেকে ভালো লাগা শুরু হয় তানিশার। ছেলে মানে, কোচিং এ ক্লাস নেন। সাধারণ জ্ঞানটা ভালোই পড়ায়। ভালো লাগার ব্যাপারটা রিশানকে জানায় সবার আগে। প্রেমট্রেম নিয়ে রিশানের খুব একটা আগ্রহ ছিলনা। রিশান টুকটাক পরামর্শ দিতো আর সুযোগ বুঝে মজা করতো, খেপাতো। কিন্তু তানিশা’র আগ্রহের তীব্রতা দেখে তার অস্বস্তি শুরু হয়।

অজান্তে বন্ধুর চেয়ে বিশেষ কোন জায়গা দিয়েছিলো তানিশাকে? নাকি উঠতি বয়সের মায়া? এসব প্রশ্ন মনে মনে ঘুরপাক খায়। এদিকে তানিশাও অবস্থা বুঝে দুরত্ব বাড়িয়ে দেয়। সেই যে দূরে চলে যাওয়া, আর কাছে আসা হয়নি, যোগাযোগ হয়নি। অবশ্য, যোগাযোগ যে একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো সেটা বললে খানিকটা ভুল হবে। রিশান টুকটাক খবরাখবর রাখতো। জেনেছিলো, ছেলেটার সাথে নাকি একসময় সত্যি সত্যি সম্পর্কে জড়ায় তানিশা। তারপর আর কি হলো তার ধারণা নেই। শাটল ভার্সিটির ষ্টেশনে এসে পৌঁছেছে। রিশান গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত সকালের নাস্তাটা সেরে ক্লাস ধরতে গেলো।

সারাদিন ঝামেলার মধ্যে টেক্সটের উত্তর দিতে ভুলে গেছে রিশান। খেয়ালই ছিলনা। সেদিন সন্ধায় বাসায় ফিরে ফোন হাতে নিলো উত্তর দিবে ভেবে। আরেকটা টেক্সট এসেছে তানিশার নাম্বার থেকে। “বুঝতে পেরেছি, বহুদিনের চাপা ক্ষোভের ভার উপড়ে উত্তর দেয়ার আগ্রহ পাওনি হয়তো। কাল বিকেল পাঁচটায়, রিওতে চলে এসো”। রিশান এবার অনেকটা দায়সারা উত্তর দিলো – “আচ্ছা”।  

তানিশা আগে এসেছে। দরজায় অপেক্ষা করছে রিশানের জন্য। রিকশা থেকে নামতেই যখন তানিশাকে চোখে পড়লো। দুই বছরে অনেক বদলেছে সে, কিন্তু একেবারে না চেনার মতো নয়। এক চিলতে মুচকি হাসি আর ভাব বিনিময়ের পর দুজনে উপরে উঠে গেলো। ক্যাফের দক্ষিন পাশটা একটু নিরব। সেখানের দুটো চেয়ারে বসে আলাপ শুরু হলো তাদের। নিজের জন্য একটা লাটে অর্ডার করেছে। রিশান কিছু খেতে চায়নি। পরে অনেকটা জোরাজোরির পর একটা এস্প্রেসো দিতে বলে। কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে কতোকিছু উঠে আসে সেদিন। পরিবার, পড়াশুনা, ভবিষ্যৎ ভাবনা সহ কতো কিছু। কিন্তু একটা বিষয় বেশ সচেতন ভাবে এড়িয়ে গেলো তানিশা – ব্যক্তিগত জীবন। রিশানও বুঝতে পেরে খুব প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছে। হয়তো ভালো যাচ্ছে না। বুঝতে অসুবিধে হলো না, কৈশোরের অস্থিরতা আর নেই। শান্ত আর ধিরস্থির আর সবকিছুতে পরিপক্ষতার ছাপ। এতোদিন পরে দেখা, কিন্তু আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই কথায়। একদম ভার্সিটি কোচিংয়ের দিনগুলোর মতো। পারলে খানিকটা বেশী বলা চলে। অনেকদিন পর দেখা বলে এমনটা হতে পারে। কে জানে?

ছেলেমানুষী স্রোত নাকি বর্ষায় তীব্র হয়, চৈত্রে তা আর খুঁজে পাওয়া যায়না। কিন্তু নদীতে বোধ হয় বর্ষা ফিরে এসেছে। স্রোত তার তীব্রতা ফিরে পেয়েছে ধীরে। রিশান আর তানিশা ঘন্টার পর ঘন্টা বাতিঘরে বই বাছাই করে কাটিয়েছে, রিকশায় সারা শহর ঘুরে বেড়িয়েছে বা কোনদিন ভোরে দুজনে সিআরবি’তে চরকির মতো ঘুরেছে – এভাবে নানান ছলে দুজনের কথা হয়েছে, দেখা হয়েছে, ভাবের বিনিময় হয়েছে, আর সম্পর্কটা পরিপক্ষ হয়েছে।

কোন এক সকাল। ঘড়িতে যখন সকাল নয়টা, এলার্মের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো। চোখ মুছতে মুছতে প্রতিদিনকার মতো ফোনের স্ক্রিনে চোখ রাখে রিশান। সকাল সকাল তানিশার টেক্সট। তাতে লেখা – “আজকে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে। রিও’তে বিকাল চারটা”। শনিবার, তাই বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এদিকে তানিশার সাথে দেখা হবে বিকালে। দ্রুত বিছানা ছেড়ে উঠার তাড়া নেই রিশানের। বিছানায় শুয়েই জানালার বাইরেরটা দেখা যায়। হঠাত মনে হলো, আজকের সকালটা একটু অন্যরকম। কি যেন নেই-নেই ভাব। বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো, ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করলো রিশান। কৃষ্ণচূড়া গাছ, টকটকে লাল ফুল, আর পরিচিত পাখিগুলো – সবই তো আছে। তবুও এমন মনে হচ্ছে কেন? সারাদিনটা তার কেমন এক বিষন্নতায় কাটলো। বিকালে বেরিয়েছে। রিওতে পৌঁছে দেখে বসে আছে তানিশা। নাহ, শুধু তানিশা না… সাথে আরেকজন। আরেকটা ছেলে। দূর থেকে দেখে মনে হলো, খুব পরিচিত চেহারা। হ্যাঁ, ওই যে… কোচিং এ যে ছেলেটা ক্লাস নিতো। রিশান বুঝে উঠতে পারছেনা। যেন হঠাত তার মাথায় আঁকাশ ভেঙ্গে পড়লো। দূর থেকে দেখে আর সামনে পা বাড়ায়নি। নীচে নেমে ফোন দেয় তানিশাকে।কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি, এখনও আসতে পারলেনা না? তানিশা বলে উঠে।

আগে বলো ঐ লোকটা কে।

হ্যাঁ, অবশ্যই বলবো। তার জন্যই তো আজকে দেখা করতে চাইলাম!

না, যা বলার এখানেই বলো।

তানিশা একটু থামলো। তারপর নিচু গলায় বললো…সজীব।

তা আমি চিনেছি। কিন্তু সে এখানে কি করছে?

ফোন কেটে দিলো তানিশা। রিশানও চলে গেলো। একটা রিকশা ভাড়া করে চললো বাসার দিকে। আরেকটা টেক্সট এসেছে, তানিশার কাছ থেকে। তানিশা লিখেছে – “We were on a break”