একা হাঁটুন, নিয়ম করে হাঁটুন

নতুন একটা অভ্যাস শুরু করেছি। হাটছি। নিয়ম করে, একা একা। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সকালেবেলা টানা একঘন্টা হাটছি। আকাবাঁকা উঁচুনিচু সার্সন রোড, চট্টেশ্বরী বা জামালখান। আবার কোনোদিন হয়তো সম্পূর্ণ নতুন কোন গলি যেটা আগে কখনও মাড়াইনি। এই সাপ্তাহিক হাঁটাহাঁটির নিয়ম হলো – এক. সাথে কাউকে নেয়া যাবেনা। দুই. চলার সময় ফোন ব্যবহার করা যাবেনা। কল আসলেও ধরা যাবে না। নোটিফিকেশনও চেক করা যাবেনা।

আমরা সবাই ব্যস্ত। সারা সপ্তাহ মিটিং-মিছিল, ঝগড়াঝাঁটি, ঠেলাঠেলি নিয়ে চলে জীবন। এর সবই ক্যাওস। এতো ঝুট ঝামেলার মধ্যে জীবন কাটাতে কাটাতে বিতৃষ্ণা চলে আসে। প্রাত্যাহিক জীবনে আমাদের এতো এতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়, দ্রুত বই সময় নিয়ে ভেবে চিনতে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ খুব কম। আবার অনেক সময় দেখা যায়, কাজ-কাজ-কাজ করতে গিয়ে নিজেকে আমরা হারিয়ে ফেলি। আমি কে, কি চাই জীবনে – এসব নিয়ে ভাবাই হয়ে উঠেনা।

এতোসব ঝামেলার ভেতরে এই নিয়ম করে এক ঘণ্টা একা হাঁটা আপনার স্বস্তির কারন হতে পারে। নিজেকে খুজে পাওয়ার কারন হতে পারে। এই একাহাটা হয়ে উঠতে পারে মানসিক প্রশান্তির উৎস। সাথে একজন থাকলে বা নোটিফিকেশন, কল এসবকে সুযোগ দিলে, দেখবেন সেসবকে সন্তুষ্ট বা সার্ভ করতে গিয়ে অনেক বিষয় আপনি হারিয়ে ফেলছেন। ভুলে যাচ্ছেন। তাই এই কাজটা এইভাবে রিলিজিয়াসলি করতে হবে।

এই একা-হাটার সময়টাতে আপনি জীবন থেকে কি চান সেটা যেমন ভাবতে পারেন, আবার ভাবতে পারেন কিভাবে ব্যক্তিগত জীবনে ছোটো ছোটো সুখের উৎসগুলোকে গুরুত্ব দেয়া যায়। আপনি কাকে গুরুত্ব দিবেন আর কাকে দিবেন সেটাও ভাবতে পারেন। মোদ্দা কথা হলো, এই এক ঘন্টা শুধু আপনার। আপনিই সিদ্ধান্ত নিবেন আপনি কি ভাববেন। অথবা আদও ভাববেন কিনা। এই একা-হাঁটা আপনাকে জঞ্জালের দুনিয়া থেকে বের করে সম্পূর্ণ নিজের মতো কিছুক্ষণ সময় কাটাতে সাহায্য করবে। এভাবে নিয়ম করে একঘন্টা একা হাটলে দেখবেন এমন হাজারটা বিষয় আছে যেগুলো আপনি স্রোতের সাথে চলতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছিলেন। আমি নিজের ক্ষেত্রে অন্তত সেটা হতে দেখেছি।

তাই হাঁটুন। নিয়ম করে একা হাঁটুন। তবে সাবধান, ভাবতে ভাবতে যেনো কানা-গর্তে বা ম্যানহোলে পরে না যান। আপনার হাঁটা শুভ হোক।

 

Please follow and like us:
error0
fb-share-icon0
fb-share-icon20