৩১৬ পৃষ্ঠার গোটা বইটি একটা সুদীর্ঘ ইন্টারভিউ আর শেষে ইংরেজিতে কিছু বক্তব্যের সংকলন। লেখক গোলাম মোস্তফা আর স্যার ফজলে হাসান আবেদের মধ্যাকার কথোপকথনের মধ্যে এগিয়েছে বইটি। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী দেশ পুনঃগঠনের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাকের মহীরুহ হয়ে উঠার গল্প যেমন উঠে এসেছে, তেমনি উঠে এসেছে স্যার ফজলে হাসান আবেদের রাষ্ট্র ভাবনাও। বইটির প্রথম প্রকাশ যেহেতু ২০০৪ সালে, তাই সব আলোচনা ও তথ্য সেসময়ের প্রেক্ষিতে করা হয়েছে।
বইয়ের শুরুতে ব্র্যাকের জন্ম হওয়ার গল্প আলোচনা করার সময় স্যার ফজলে হাসান আবেদের মুক্তিযোদ্ধের সময়কার কিছু মতামত শুনে আমি অবাক হয়েছি। সেখানে তিনি স্পর্শকাতর কিছু বিষয়ে স্পষ্ট মন্তব্য করেছে। সেখানে তাজউদ্দীন সুযোগ না পাওয়ায় কি হলো, কি হতে পারতো, বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসার পর তার ভূমিকা কেমন হতে পারতো এসব আলোচিত হয়েছে। আলোচনার একজায়গায় তিনি বলেছেন “আমার ধারণা, শেখসাহেব যেকোনো কিছুর চাইতে বেশী গুরুত্ব দিয়েছিলেন তার প্রতি আনুগত্যকে। যে তার প্রতি বেশী অনুগত, তাকে তিনি নিজের লোক মনে করেছে। এ আনুগত্যটা চলে গিয়েছিল তোষামোদের পর্যায়ে। আর সে তোষামোদকারীদেরই শেখসাহেব কাছে টেনে নিয়েছে। তাদেরকে বড়কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন। ঐ অনুগত ব্যক্তির অযোগ্যতা আর অসততাকে তিনি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন নি”
১৫ আগস্ট সম্পর্কে আরেক জায়গায় তিনি বলেছেন “জাতি তার পিতাকে হারিয়েছে। স্বভাবতই বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের বিক্ষোভে ফেটে পড়ার কথা। অথচ কিছুই হলো না। উল্টো শেখ মুজিবের কিছু লোক গিয়ে যোগ দিলো খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায়”
তিনি আরও বলেছেন “যে কোনো সঙ্কটে জাতির বিবেক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারতেন শেখ মুজিব। গান্ধী এটাই করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকেও আমাদের এই প্রত্যাশাই ছিলো। যদি আমাদের এই প্রত্যাশা পূরণ হতো তাহলে এতো বড় মাপের নেতাকে এতো অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা হারাতে হতো না”
এরপর ধীরে কথা গড়ায় ক্ষুদ্রঋণ, ওরাল স্যালাইন, টিকাদান, যক্ষা নিরাময়, উপআনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম, আড়ং এবং এনজিও নিয়ে দেশের মানুষের ধারণা প্রসঙ্গেও। এই বইয়ের লেখক রাগঢাক রেখে খোলামেলা প্রশ্ন করেছেন। স্যার ফজলে হাসান আবেদও উত্তর দিয়েছেন একইভাবে।
ব্র্যাকের সমস্ত কার্যক্রমেই মহিলাদের প্রাধান্য দেখতে পাওয়া যায়। বইটি বিভিন্ন অংশে তার কারন বিভিন্নভাবে খুঁজে পাওয়া যাবে। একজায়গায় তিনি বলেছেন “পরিবারের যে কোন বিপর্যয়ে মহিলারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করে বিপদ থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে। নিজে না খেয়ে বাচ্চাকে খাওয়ায়। কিন্তু একজন পুরুষ এই কাজটা করে না” – কথাটা আপাত অস্পষ্ট মনে হলেও এরকম নানান উদহারন আছে বইটিতে।
ব্র্যাক সবসময় চেয়েছে লোকাল রিসোর্সকে হার্নেস করতে, স্থানীয়দের ক্ষমতায়ন করতে। ব্র্যাক তাদের ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশব্যাপী প্যারাভেটেরিনারিয়ান গড়ে তুলেছিলেন। সেখানে দেখা গেলো ছেলে প্যারাভেটেরিনারিয়ানরা নিজেদের অনেক বড় ডাক্তার হয়েছে এমন ভেবে উল্টাপাল্ট এক্সপেরিমেন্ট করতে লাগলো। অন্যদিকে নারী প্যারাভেটেরিনারিয়ানরা যা শিখেছে তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলো। তখন থেকে ব্র্যাক সিদ্ধান্ত নিলো এই প্রকল্পে কোন ছেলে নিয়োগ দেয়া হবে না।
একসময় যখন দেশের প্রত্যন্ত সব জায়গায় বিদ্যুৎ ছিলো না তখন ব্র্যাক তার টিকাদান কর্মসূচী চালাতে গিয়ে এক সমস্যায় পড়লেন। বিদ্যুৎ না থাকলে তো থারমোফ্লাক্স চালানো যাবে না। তাহলে টিকা সংরক্ষণ করবে কিভাবে? তাই তারা থানা সদরে ফ্রিজ থেকে ভ্যাকসিনের শিশি বের করে সেটা পাকা কলার ভেতর করে নিয়ে যেতেন প্রত্যন্ত গ্রামে।
ব্র্যাক সহ অন্য এমজিওগুলো সম্পর্কে সবারই একই অভিযোগ তাদের ক্ষুদ্রঋণের সুদহার নিয়ে। বলতেই পারেন, এনজিওরা তো অনুদান পায়, তবুও কেন তাদের সুদহার এতো উচ্চ? স্যার ফজলে হাসান আবেদ জবাব দিয়েছেন “ঋণের পরিমাণ পাঁচ হাজার টাকার কম হলে আমাদের লোকসান হয়। পাঁচ হাজার টাকার উপরে হলে কিছু উদ্বৃত্ত হয়। আমরা যদি শুধু ঋণকার্যক্রমকে শুধু লাভজনক করা জন্য উদগ্রীব থাকতাম তাহলে পাঁচ হাজার টাকার নীচে কোন ঋণ বিতরন করতাম না। অথচ আমাদের কাছে ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে শতকারা ৩৭ ভাগই পাঁচ হাজার টাকার কম ঋণ নিয়েছেন” তাছাড়াও আরেক জায়গায় উল্লেখ আছে যে, সাধারনত দুই শতাংশ ঋণ এমনিতেই ফেরত আসে না। সেখানে কোন অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তো আর কথাই নেই।
আমার কাছে ব্র্যাকের সবচেয়ে দারুণ কাজগুলো একটি হলো খাবার স্যালাইন পৌঁছানোর কাজটা। চমৎকার একটা ব্যাপার শেয়ার করা যাক – স্যালাইন উদ্ভাবন হলো, দলবলকে প্রশিক্ষণ বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে মা’দের স্যালাইন বানানো শেখানো হলো, রান্নার পাত্রে আধা সের বরাবর স্থায়ী দাগ দেয়া হলো, কিন্তু তারপরও দেখা যাচ্ছে বাড়িতে খাবার স্যালাইন তৈরি করে শিশুদের খাওয়ানোর হার মাত্র ৬শতাংশ! কেন এমন হলো? শেষে একদল এন্থ্রোপলজিস্ট পাঠিয়ে উদ্ভাবন করা হলো এতো কম ব্যাবহার করার কারন। আমাদের নারীদের পরিবারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা পোক্ত নয়। স্যালাইন বানানো শেখানো হয়েছিলো মায়েদের। তাই বাচ্চার ডায়রিয়া হলে যখনই মায়েরা হাতে বানানো স্যালাইন খাওয়াতে গেলো, বাবারা তখন বসলো বাঁধা দিয়ে। কি না কি খাওয়াচ্ছে। এটা বুঝার পর ব্র্যাক পরবর্তীতে বাবাদেরও এ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা শুরু করলো। এবার দেখা গেল ঘরে তৈরি স্যালাইনের ব্যবহার ৬% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০% এর উপরে।
ব্রাকের একটা দর্শন হলো কর্মীদের সাফল্যের উপর ভিত্তি করে পারিশ্রমিক প্রদান করা। এতে নাকি ব্র্যাক অনেক কাজ দ্রুততা ও সফলতার সাথে করতে পেরেছেন। নানা সময়ে স্যার ফজলে হাসান আবেদের কাছে এমনটা শোনা গেছে। তাদের আরেকটা দর্শন হলো মানুষ ফ্রিতে দিলে সেটাকে কম গুরুত্ব দিয়ে দেখে। তাদের যক্ষা নিরাময় কর্মসূচীতে ব্র্যাক বিনামূল্যে ওষুধ বিতরনের পরিবর্তে দুশটাকা ফেরতযোগ্য জামানত নেয়া শুরু করলো। শর্ত হলো, সম্পূর্ণ কোর্স শেষ না করলে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না। এটাও বেশ কাজে দিয়েছে।
লেখক প্রশ্ন করেছিলেন, ব্র্যাক এতো দ্রুততা ও কার্যকারিতার সাথে যে কাজটা করছে, সরকার দেখা যাচ্ছে সেভাবে পারছেন না – কারন কি? স্যার ফজলে হাসান আবেদ জানিয়েছেন – কাজ হতে গেলে দুটি জিনিসের প্রয়োজন। একটি হলো সাধারণ মানুষের চাহিদা, প্রয়োজনবোধ, অধিকারবোধ ইত্যাদি, অন্যটি হলো ব্যবস্থাপনা। জানিয়েছেন দেশের বিশাল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এখনো শিক্ষাদিক্ষায় পিছিয়ে থাকার কারণে তারা নিজেদের দাবী তুলে ধরতে পারছেন না। দেশে শিক্ষার হার আশি-নব্বই শতাংশ হলে লোকজন সে সমস্যা ধীরে শীরে কাটিয়ে উঠতে পারবেন। তাছাড়াও মনিটরিংটাও বেশ জরুরী।
ব্র্যাকের সব কাজের মূলে আছে দারিদ্র বিমোচন। ব্র্যাক যখন দেখছিলেন ছেলেপেলেরা তখনো শিক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছিলো, সেখান থেকে ব্র্যাকের উপ আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের উৎপত্তি। স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেছেন শিক্ষায় বাচ্চাদের অনাগ্রহের একটা কারন অবশ্যই দারিদ্রতা। অন্যটা হলো শিক্ষায় আনন্দের ঘাটতি। ব্র্যাক তার শিক্ষা কার্যক্রমের কারিকুলামটা গড়ে তুলেছে খুব যত্ন নিয়ে। এই কারিক্যুলামে বিশ্বসেরা পদ্ধতি স্থান পেয়েছে। একটা জরিপ বলছে নেদারল্যান্ডে সবচেয়ে ভালো গণিত শেখানো হয়। জাপান বিজ্ঞান শেখায় সবচেয়ে ভালো উপায়ে। শিশুশিক্ষা সবচেয়ে ভালো ইতালিতে। নিউজিল্যান্ড সবচেয়ে ভালো শেখায় মাতৃভাষা। আমেরিকার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী আর সুইডেনের বয়স্ক নাগরিকদের শেখানোর পদ্ধতি সবচেয়ে ভালো। ব্র্যাক তাদের স্কুলগুলোতে যে পদ্ধতিতে শেখায় সেটা মূলত সমগ্র বিশ্বের সেরা পদ্ধতিগুলোর সম্মিলন।
স্যার ফজলে হাসান আবেদ মনে করেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া উচিত স্থানীয় সরকারের হাতে। প্রশ্ন করেছেন এতোদূরে থেকে কর্তাব্যাক্তিরা কীভাবে এতোদূর থেকে অন্যের কাজ দেখাশোনা করবেন?
শুধু শিক্ষা নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যও স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা আবশ্যক বলে মনে করেন তিনি। সেটা সম্ভব না হলে প্রত্যাশিত উন্নয়ন হবে না। বইয়ে বলেছেন, স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতায়ন করার প্রচেষ্টায় প্রধান বাঁধা হলো একগোষ্ঠি স্থানীয় সাংসদ। স্থানীয় সরকারের হাতে যদি পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকে তাহলে সাংসদদের স্থানীয় ইস্যুগুলো নাকগলানোর ক্ষমতা কমে যাবে। এই ভয়েই স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়নে সাংসদদের বিরোধীতা।
গ্রামের মহিলারদের কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিদেশী উন্নয়ন সংস্থা ‘এমসিসি’ এর সহযোগিতায় ১৯৭৮ সালের প্রথম দিকে শুরু হয় আড়ং এর কার্যক্রম যা আয়েশা আবেদের হাত ধরে এগিয়ে চলে। অভিজ্ঞ বিদেশীদের এনে দেশী লোকদের ট্রেনিং নিয়ে দক্ষ করে তোলার পর তাদের দ্বারা চলতে থাকে আড়ং এর পথচলা। আড়ং এখন ডিজাইন এবং মান, দুটো দিক থেকেই প্রশ্নের উর্ধে। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও আছে আড়ং এর আউটলেট। লোকজনের আড়ং নিয়ে অভিযোগ হলো, বিদেশী অনুদান থাকার পরও আড়ং এর পণ্যের মূল্য অনেক বেশী। আবার অভিযোগ আছে আড়ং এর শ্রমিকদের মজুরিও তুলনামূলক কম। তার জবাব হলো – আড়ং কখনোই শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির কম দেয়নি। দাম কমাতে হলে মজুরী কমিয়ে দিতে হবে। “একজন দরিদ্র মানুষকে কম মজুরী দিয়ে মধ্যবিত্তের সুবিধা করে দিতে হবে এমন চিন্তা আমাদের কখনো মাথায় ছিলো না, এখনো নাই” বলেছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। স্পষ্ট হওয়ার জন্য তিনি আরও বলেছেন “আড়ংয়ে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছি, সে পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে রাখলে যে লাভ আসত, বছরশেষে হিসাব করলে দেখা যায়, আড়ং থেকে সে পরিমাণ লভ্যাংশই আমরা পাই। সুতরাং আড়ং বেশী লাভ করছে না। প্রথম চারবছর আড়ং কিন্তু লোকসান দিয়েছে”
একথা কথা উল্লেখ না করলেই নয়। আড়ং এর শাখা বাড়ানোর ব্যাপারে স্যার ফজলে হাসান আবেদ মনে করেন প্রথমে যে শাখাগুলো আছে সেগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর শাখা বাড়ানোর চিন্তা করতে হবে।
এনজিওকর্মী ও পরিচালকদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা, কারিতাস, ওয়ার্ল্ড ভিশনের বিরুদ্ধে ধর্মান্তরকরণের যে অভিযোগ সেসব নিয়েও কথা হয়েছে এই বইয়ে। এডাব এর অকার্যকর হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন “যখন কোন সংগঠন সমস্যায় পড়ে, তখন নেতৃত্বের মধ্যে ত্যাগ স্বীকারের মনোভাব থাকা প্রয়োজন” এনজিওদের নিয়ন্ত্রনে আইন নিয়েও কথা এসেছে এখানে।
ব্র্যাক তো এনজিও, তারা কেন ব্যবসা করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে বেশ কিছু উদাহারন দিয়েছেন। তিনি বলেন হার্ভার্ড অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ার পরও তাদের ১৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ আছে। সম্পদ আছে ক্যাম্ব্রিজেরও। অক্সফামের ৭০০ দোকান আছে গোটা বিশ্বে। মার্কিন জিডিপির ৮% আছে এনজিও থেকে। আমাদের ভূল ধারণা হলো, আমরা মনে করি অলাভজনক মানে কোন ব্যবসা করা যাবে না। ব্যবসা করা যাবে, তবে লাভগুলো বন্টন না করে সামাজিক কাজের প্রসারে পুঃবিনিয়োগ করতে হয়।
একভাবে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মান সম্পন্ন শিক্ষা দিতে যে পরিমাণ খরচ সেটা পূরণ করতে গেলে অল্পটাকা নিয়ে টিকে থাকা যাবে না। তবে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কিছু ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে পড়ানোর জন্য তহবিল গঠনের কাজ করছে। ব্র্যাক চায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে, যারা দেশের দারিদ্র বিমোচনে জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। এটা মেধাবীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা দিয়ে দেশে ধরে রাখার একটা চেষ্টাও বটে।
ব্র্যাক কীভাবে বাংলাদেশে কাজের অভিজ্ঞতা অন্যদেশে কাজে কাজে লাগিয়ে সেসব দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুনাম অর্জন করছে সেসব উঠে এসেছে।
বই পড়ার পুরোটা সময় জুড়ে যেভাবে সমস্যা নির্বাচন ও সমাধানের কথা আলোচিত হয়েছে, তাতে আমার মনে হয়েছে ব্র্যাক অত্যন্ত বাংলাদেশী একটা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশের মানুষের প্রতিষ্ঠান। এর সমস্যাগুলো যেমন মানুষের নিজেদের সমস্যা, তেমনি সমাধানগুলোও অত্যন্ত সহজ-সরল। সমাধানগুলো এসেছে মাঠ থেকেই। তার ফলে যেটা হয়েছে, ব্র্যাকের দেয়া সুবিধাগুলো ভোগ করতে দেশের প্রান্তিক মানুষের অসুবিধা হয়নি।
এতো অসাধারণ একটা মানুষ, অসাধারণ একটা প্রতিষ্ঠান যেভাবে দেশ-বিদেশকে বদলে দিচ্ছে তা দিয়ে একটা সিনেমা বানালে মন্দ হয় না। নাকি?
মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত বইটির প্রথম প্রকাশ ২০০৬ সালে। প্রচ্ছদ করেছেন কাইয়ুম চৌধুরী। গায়ের মূল্য ৬৫০টাক। তবে বইমেলা উপলক্ষ্যে ২৫% ছাড় ও বিকাশে পেমেন্ট করলে অতিরিক্ত ১০% ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে। পাওয়া যাবে রকমারি তেও। হ্যাপি রিডিং।