বিশেষ এক কাজে আমার ‘TIN সার্টিফিকেট’ এর প্রয়োজন হয়েছিলো। এখন খুব সহজে ঘরে বসেই অনলাইনে সেটা পাওয়া সম্ভব। কিন্তু ব্যপার হলো সেটার জন্য যে এনআইডি প্রয়োজন, ওটা আমার নেই। আছে শুধু পাসপোর্ট। সেটাকে কোনভাবে কাজে লাগানো যায় কিনা সেটা দেখার জন্য ঢুঁ মারতে গিয়েছিলাম ‘ইনকাম ট্যাক্স অফিস’ এ। যাওার আগে অবশ্য দুয়েকজনকে ফোন দিয়ে যা তথ্য পাওয়া গেলো তা সম্বল করে রওনা দিলাম। একজন আমাকে বলেছিলেন হেল্পডেস্কে কথা বললেই তারা সব ম্যনেজ করে দিবে। গিয়ে দেখি হেল্পডেস্কে তালা ঝুলছে। ব্যাপার কি? না আজ ছুটির দিন, না বেঠিক সময়? সবই তো ঠিক। অনেকের কাছে জানতে চাইলাম ঘটনা কি, কেন তালা ঝুলছে এসব… গলায় টাই ঝুলানো অনেক ব্যক্তিও ছিলেন আমার জিজ্ঞাসিত জনদের মধ্যে। কেউই ঠিকঠাক জবাব দিতে পারলো না। বিভিন্নজন আবছা আবছা যা বললো, তা একসঙ্গে করলে দাড়াল – ‘যিনি ওটার দায়িত্বে আছেন, উনার পরিবার ঢাকায় থাকেন। উনিও সেখানে গেছেন।’ – মানে ছুটিতে। ভালো। তাই বলে হেল্পডেস্ক বন্ধ থাকতে হবে? উনার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার কি কেউ নেই? নাকি শুধু ওই একজনই আছেন? হেল্পডেস্ক হলো এমন একটি বুথ, যেখানে যেকেউ যেকোন মুহূর্তে গিয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা বা নির্দেশনা পেতে পারেন। অফিসের অন্যান্য হর্তাকর্তারা আসুক না আসুক, হেল্পডেস্ক খোলা রাখতেই হবে। যেকোনভাবে।
যাহোক, অভিযোগ জানাতে সোজা গেলাম ‘কর কমিশনার’ এর অফিসে। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি প্রায় ১২ টা। কিন্তু সহকারি জানালেন উনি আসেননি। এবার অনুধাবনে আসলো, ‘প্রতিষ্ঠানের মাথা যেখানে ঠিক নেই, সেখানে অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিক থাকবে কি করে?’ সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে অবশেষে এমন একজনকে পাওয়া গেলো যিনি আমাকে সাহায্য করতে পারেন। উনি পরিচয় করিয়ে দিলেন ম্যানুয়েল এক পদ্ধতির সঙ্গে। অনলাইনে আবেদন করতে হবে, সেখানে একটা ইটোকেন দিবে যেটা এখানে এনে জমা দিলে তারা জানিয়ে দিবে আমার টিন সার্টিফিকেট কবে আসবে সেটা। এ জায়গায় ঠিক ‘আসবে’ না বলে ‘আনবো’ বলাটায় ভাল। কারন আমার নাকি টাকা পাঠাতে হবে সেটা ঢাকা থেকে আনার জন্য। হাজার দুয়েকের মতো। কারন হিসেবে জানালেন সেটা নাকি ঢাকা এনবিআর থেকে আসবে। আমি জানতে চাইলাম এটা কি ভাই বিল্ড ইন ম্যানুয়েল নাকি কাস্টম মেড? এটা কি আসলেই ম্যানুয়েল? তাহলে কি আমাদেরই টাকা দিয়ে আনাতে হবে? তিনি হয়তো জানেন। কিন্তু আমার মাথায় নেই। আপনার জানা থাকলে জানাবেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের একজন গবেষণা ফেলো বলেছন আমাদের দেশের ৪৭% কাজ অটোমেশনে আসার সুযোগ রয়েছে। যার মধ্যে গার্মেন্টস সেক্টরটাই সবার উপরে। এ তথ্যটাই আমাকে কিছুটা স্বস্থি দিলো। সরকারকে জানালে ঠিক কতোটুকু কাজ হবে সেটা বুঝেউঠতে পারছিনা। তবে খোদাতায়ালা যদি তাদের উপর একটু সদয় হন, তাহলে বোধ হয় কাজ হতে আরে। তাই সোজা উপরওয়ালার কাছে মর্জি, আপনি এই ম্যানুয়েল কাজ সহ অন্যান্য সকল কাজকে সেই ৪৭% কাজের মধ্যে ফেলে দিন। কাজটাকে অটোমেটেড করার তৌফিক দান করুন। আমিন। রচনাটা শেষ হলো।
